মোঃ জহিরুল হক বাবু।।
ভুয়া কাবিননামার মাধ্যমে বিয়ে করে এক তরুণীকে চার মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার রামপুর এলাকা থেকে মো. রেজাউল করিম মাছুম (৩৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিয়ে করেছেন বলে জানা যায়। র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাকামারা এলাকার ভুক্তভোগী ওই তরুণী র্যাব কার্যালয়ে ১৩ মে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মোবাইল ফোনে অপরিচিত নম্বরে ফোনের মাধ্যমে সদর উপজেলার আন্দরসার এলাকার বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম মাছুম নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে বুঝতে পেরে রেজাউল তরুণীকে বিয়ে করে সুখে-শান্তিতে রাখার জন্য আশ্বস্ত করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ের জন্য রাজি করান। গেল বছরের ১৬ ডিসেম্বর এক শ টাকার স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে বিয়ে হয় তাঁদের। পরে যে যার মতো বাড়ি চলে যান। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত নগরীর একটি এলাকায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন তাঁরা।
এ চার মাস রেজাউল বেকার থাকলেও ওই তরুণী ইপিজেড এলাকায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালান। ১২ এপ্রিল চাকরির কাজে স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) চান ওই তরুণী। এ সময় রেজাউলের এনআইডি কার্ড দেখে জানতে পারেন কাবিনে উল্লেখিত রেজাউলের ঠিকানা ভুয়া।
বিষয়টি জানতে পেরে রেজাউলকে পুনরায় ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে রেজাউল তরুণীকে বিভিন্ন হুমকিধমকি দিতে থাকেন। পরে রেজাউলের নিজ বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগী তরুণী জানতে পারেন আগেই তিনটি বিয়ে করেছেন রেজাউল। যার মধ্যে দুই স্ত্রী রেজাউলের বাড়িতে রয়েছেন এবং একজনকে এরই মধ্যে তালাক দিয়েছেন। এমন অনেক মেয়ের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করেছেন। এ ঘটনার পর ওই তরুণী তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকে রেজাউল ওই তরুণীকে তাঁদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ভিডিও টাকা না দিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
র্যাব আরও জানায়, রেজাউলকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা একাধিক বিয়ের হলফনামা এবং ভুয়া এনআইডি কার্ড জব্দ করা হয়। যেগুলো ব্যবহার করে রেজাউল ওই তরুণীর মতো আরও ৬-৭ জন নারীর সঙ্গে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত অবৈধভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
এ বিষয়ে র্যাবের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page